প্যাগোডা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ভ্রমনের আকর্ষণ II myanmar পর্ব – ২

Special Childs Care-adds
প্যাগোডা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ভ্রমনের আকর্ষণ II myanmar পর্ব – ২

আমার প্রতিষ্ঠান “দারুণ ট্রাভেলস” এর ব্যবস্থপনায় সম্প্রতি ২৭ জন পর্যটক নিয়ে ১৮ দিনের myanmar রিলিজিয়াস ট্যুর করে এসেছি। লকডাউনের অবসরে বসে মিয়ানমার ভ্রমণ সম্পর্কিত কিছু তথ্য ধারাবাহিকভাবে লিখে পোস্ট করবো, যাদের ভালো লাগে পড়বেন তবে অনুরোধ থাকবে কেউ যেন লেখাটি কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেবেন না, ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

চলমান পর্ব – ২

নেপিডো’তে বার্মিজ’রা এক দুর্দান্ত কাজ করেছে। উপ্পাতাসান্তি প্যাগোডা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পববথিরি টাউনশীপে উদয়রসি পাহাড়ের তটে গড়ে তুলেছে বৌদ্ধদের প্রধান তীর্থস্থান ভারতের বুদ্ধগয়ায় অবস্থিত মহাবোধি টেম্পল কমপ্লেক্সের একটি রেপ্লিকা।

মূল বিহারের অনুকরণে একই স্থাপত্যশৈলীতে ১৬২ ফুট বা ৪৯ মিটার উচ্চতার মূল বিহার, পাশাপাশি একে একে সপ্ত মহাস্থানের প্রত্যেকটাই একই আদলে নিখুঁতভাবে তৈরি করেছে। এখানে দেখতে পাবেন বিশ্বের লক্ষ কোটি মানুষের পূজিত মহাবোধি টেম্পলের বুদ্ধ প্রতিবিম্বের রেপ্লিকা যেটার বুদ্ধাভিষেক হয়েছিল ১৩ই মে ২০১৪ সালে। এছাড়াও চারি মহাতীর্থের আদলে তৈরি করা হয়েছে লুম্বিনী, সারনাথ ও কুশীনগরের রেপ্লিকা।

বুদ্ধগয়া থেকে মূল বোধিবৃক্ষের একটি শাখা এনে এখানে বজ্রাসনের পাশে রোপন করা হয়েছে। আমাদের ভ্রমণের সময়টাতে  দেখেছি প্রায় শ’খানেক ফুট উঁচু হয়ে বেশ ডালপালা ছড়িয়ে ছায়াঘন পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এর ছায়ায় বসে আমাদের ভ্রমণসংগীরা প্রায় ঘন্টাখানেক ধর্ম আলোচনা করেছে। এখানে মোটেও ভীড় নেই, বিশাল এলাকা, সুন্দর পরিবেশ, পরিচ্ছন্ন ও মার্জিত মানুষজন।

এই রেপ্লিকাগুলো শুধুই যে রেপ্লিকা তা কিন্তু নয়, বুদ্ধগয়ার মতোই সমান শ্রদ্ধায় ও সন্মানে এখানে পূজিত হচ্ছে। Commander-in-Chief of Defence Services এর অধীনে এই কমপ্লেক্স সম্ভবত তাদের কথা চিন্তা করে তৈরি করা হয়েছে যারা বুদ্ধগয়া তীর্থভ্রমণে যেতে পারেন না বা ভ্রমণে সমস্যা আছে সে সকল ধার্মিক উপাসক যেন তীর্থভ্রমণের পুণ্য এখান থেকেই অর্জন করতে পারেন।

Image credit Darun Travels: মায়ানমার ভ্রমণ
Image credit Darun Travels: মিয়ানমার ভ্রমণ

ইয়াঙ্গুন/রেঙ্গুন পর্ব

পূর্বে রেঙ্গুন নামে পরিচিত ইয়াঙ্গুন মিয়ানমারের পুরাতন রাজধানী। নামটি রাখাইন উচ্চারণ রঙ্গুঁ থেকে আসে বলে ধারণা করা হয়। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এটি বার্মার রাজধানী ছিলো। আনুমানিক ৭ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে ইয়াঙ্গুন মিয়ানমারের সবচেয়ে জনবহুল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক  শহর। ব্রিটিশ উপনিবেশ থাকাকালীন ২৩ ডিসেম্বর ১৯৪১ তে জাপানিরা প্রথম বোমা ফেলেছিলো তৎকালীন রেঙ্গুনে।

ইয়াঙ্গুন হল ঐতিহ্য ও জাতিগত বৈচিত্রের শহর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এ অঞ্চলে ভারতীয়রা সংখ্যাগরিষ্ঠ ও ব্যবসা বাণিজ্যে এগিয়ে ছিলো কিন্তু বর্তমান জনসংখ্যার বেশিরভাগই বার্মীয় (বর্মণ) বংশোদ্ভূত। ভারতীয়, বাংলাদেশী ও চীনা বংশোদ্ভূত বার্মিজের সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী এই ঐতিহ্যবাহী শহরেই দেখা যায়। রাখাইন এবং ক্যারেন সম্প্রদায়ের লোকও প্রচুর সংখ্যায় এ শহরে রয়েছে।

ইয়াঙ্গুনে বৌদ্ধ, ইসলাম, খ্রিস্টান ও হিন্দু ধর্মের জনগোষ্ঠীর সহাবস্থান ও পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আছে। একই এলাকায় একাধিক বড় মসজিদ দেখেছি যেখানে শুক্রবারের জুমার নামাজে আমাদের দেশের মতো প্রচুর ভীড় হয়। বেশকিছু হিন্দু মন্দিরও এখানে আছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষের মধ্যে যেমন শারীরিক গঠন ও কালচারে পার্থক্য আছে এখানেও ভারতীয় বংশোদ্ভূত বার্মিজদের মধ্যে সেই পার্থক্যগুলো চোখে পড়ে। হিন্দু মন্দিরের স্থাপত্যকলা দেখে সে এলাকার বার্মিজ-হিন্দু’রা কোন ভারতীয় রাজ্যের বংশোদ্ভূত সে ধারণা পাওয়া যায়। চীনাদের দেখে আমি কিছুই বুঝিনি। যদিও, বার্মিজ ও চীনা’রা দেখতে কিন্তু মোটেও এক নয়।

রেঙ্গুন হিসেবে বিশ্বখ্যাত শহরটিতে মিয়ানমারের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অনেক কিছুই আছে। আমাদের চট্টগ্রামের সঙ্গেও এই শহরের যেন আত্মার বাঁধন। একসময় চট্টগ্রাম থেকে ব্যবসার জন্য রেঙ্গুন  যেতেন ব্যবসায়ীরা। ভালোবাসায় বাঁধা পড়ে অনেকে সংসারও পেতেছেন। এ নিয়ে রয়েছে অনেক কিংবদন্তি।

আমাদের রেঙ্গুন ভ্রমনের সময় আমি কয়েকজন ব্যবসায়ী/দোকানদার পেয়েছি যারা রাখাইন ভাষায় কথা বলে। মানে আমাদের দেশের রোহিংগা’রা যে ভাষায় কথা বলে তারাও সে ভাষায় কথা বলে এবং সে ভাষাটা আমাদের চট্টগ্রামের লোকজনের কাছে বোধগম্য। দোকানে কোনকিছু কিনতে গেলে আমাদের এটিচুড ও ইংরেজির একসেন্ট শুনে ওরা বুঝতে পারে আমরা চট্রগ্রামের লোক। বলা বাহুল্য, মহিলারাই এখানে ব্যবসা পরিচালনা করে। তাদের অনেকের সাথে আমি খাঁটি চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলেছি।

একটি ভিডিও গেমসের দোকানের মালিক “রুজি” নামের একজন মুসলিম রাখাইন মহিলার সাথে আমার পরিচয় হয়, সে খুব ভালো ও স্পষ্ট উচ্চারণে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারে। আলাপে জানা গেল, তার বাবা-মা-ভাইবোন সবাই চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট থাকে। নিয়মিত যোগাযোগ আছে। তারা সবাই একসময় রাখাইনে বাস করতো, ১৫ বছর আগে তার বিয়ে হয় ইয়াঙ্গুনের এক রাখাইন মুসলিম পরিবারে যারা বিগত ২০ বছর আগে রাখাইন থেকে ইয়াঙ্গুনে এসে বসবাস শুরু করছিলো। এরপর জাতিগত দাঙ্গা শুরু হবার পর তার বাবার পরিবার চট্টগ্রামে চলে যায়, তাও প্রায় ১০/১২ বছর আগে কথা। তার সাথে আমার কয়েকদফা দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছিল, জিজ্ঞাসা করে জানতে পেরেছিলাম – সংখ্যালঘু রাখাইন মুসলিম হলেও তাদের জীবনযাত্রা নিঃশঙ্ক, সাবলীল ও আর্থিক সঙ্গতিসম্পন্ন।

ইয়াঙ্গুন হল দেশের বাণিজ্য, শিল্প, রিয়েল এস্টেট, মিডিয়া, বিনোদন এবং পর্যটনের প্রধান কেন্দ্র। শহরটি জাতীয় অর্থনীতির প্রায় এক পঞ্চমাংশ অবদান রাখে। আমার দেখায় ইয়াঙ্গুনের ইলেকট্রিক, হার্ডওয়্যার, পোল্ট্রি, ডেইরী, বুচার সপ, রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় রাখাইন মুসলিমদের আধিপত্য। আবাসিক হোটেল, ট্যুরিজম, এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু জনগোষ্ঠীর প্রাধান্য এবং চাইনিজ বংশোদ্ভূত বার্মিজরা আধিপত্য বিস্তার করেছে স্বাস্থ্যসেবা, ইম্পোর্ট ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়।

ইয়াঙ্গুন শহরের কেন্দ্রে রয়েছে শোয়েডাগন প্যাগোডা। শুধু মিয়ানমার নয়, বিশ্বের অন্যতম অনন্য স্থাপত্য এটি। সোনালি এই প্যাগোডা দেখার জন্য বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছাড়াও বিশ্বের হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন। এটি হলো মায়ানমারের তথা সমগ্র বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর কাছে অতি আবেদনময় একটি পবিত্রস্থান। কারণ এখানে বর্তমান কল্পের চারজন বুদ্ধের পবিত্র ধাতু সংরক্ষিত আছে বলে জানা যায়। যার মধ্যে ককোসান্ধ বুদ্ধের ব্যবহার্য সামগ্রী (?), কোনাগমণ বুদ্ধের জলছাঁকনি, কাশ্যপ বুদ্ধের চীবরের অংশ এবং মহামতি গৌতম বুদ্ধের মাথার আটগাছি চুল। প্যাগোডাটি আড়াই হাজার বছর আগের তৈরি বলে দাবি করা হয় এবং বৌদ্ধ ইতিহাসের একটি অন্যতম প্রাচীন প্যাগোডা বা স্তুপ। বার্মিজ’রা শোয়েডাগন প্যাগোডা’কে সন্মান করে “বড় ফয়া” বলে। ফয়া মানে বার্মিজ ভাষায় টেম্পল। প্যাগোডা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ভ্রমনের আকর্ষণ।

বোধিপ্রাপ্ত হওয়ার পর বুদ্ধ যখন সপ্ত মহাস্থান প্রদক্ষিণ করছিলেন তখন ব্রহ্মদেশের দুই বণিক ভাই তপস্সু ও ভল্লিকা বুদ্ধকে খাদ্য দান দিয়ে আশীর্বাদ স্বরূপ বুদ্ধের তাঁর মাথার আটগাছি চুল উপহার পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁরা ফিরে এসে রেঙ্গুনের ততকালীন স্থানীয় শাসক রাজা ওক্কালাপার সহায়তায় সিঙ্গুতারা পাহাড়ে যেখানে গৌতম বুদ্ধের পূর্ববর্তী অন্যান্য বুদ্ধের পবিত্র ধাতু সংরক্ষণ হয়ে আসছিলো সেখানেই মহামতি বুদ্ধের চুল ধাতু সন্নিবিষ্ট করে।

খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৮ থেকে শুরু করে ১৪ শ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ৩২ জন রাজা শোয়েডাগন প্যাগোডার রক্ষক ছিলেন। এদের বিভিন্নজন বিভিন্নসময়ে স্তূপটির নকশা, পরিধি ও উচ্চতা বৃদ্ধি করেন। ১৪৫৩ খ্রিস্টাব্দে রানী শিন-স-পুর আমলে এটি ৩০২ ফুট পর্যন্ত উঁচু করা হয়। ১৭৬৮ সালের ভূমিকম্পে প্যাগোডার মূল চূড়াটি ভেঙে পড়ার পর রাজা সিনবিউশিন এটিকে সংস্কার করে ৩২৬ ফুট অর্থাৎ ৯৯ মিটার পর্যন্ত উঁচু করেন। এই উচ্চতাই এখনো পর্যন্ত বহাল আছে।

প্যাগোডার আকার, উচ্চতা, দৃষ্টিনন্দন নির্মানশৈলী এবং এটির সোনালী আভার কারণে যে কেউ মন্ত্রমুগ্ধ হতে বাধ্য। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ৫১ মিটার (১৬৮ ফুট) উঁচু সিঙ্গুতারা পাহাড়ের ওপর স্থাপিত ৯৯ মিটার (৩২৬ ফুট) সুউচ্চ প্যাগোডা যেন শহরের পুরো আকাশ দখল করে আছে। ইয়াঙ্গুন শহরের প্রায় প্রতিটি প্রান্ত থেকে এর চূড়াটি হবে আপনার দৃষ্টির শেষ সীমা। প্যাগোডার নীচের স্তূপটি ৮৬৮৮ টি সলিড সোনার পাতে আবৃত, তার উপরের স্তুপটি ১৩,১৫৩ টি সলিড সোনার পাত দ্বারা মোড়ানো। প্যাগোডার গোড়ার ঘেরের পরিধি ১,৪২০ ফুট এবং এটির প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা ৩২৬ ফুট।

এর মূল চুড়ার কারুকার্য ও সৌন্দর্যের বিস্তারিত অবলোকন করার জন্য মানুষের চোখের দৃষ্টি যথেষ্ট নয়, মানুষের চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টিসীমা যতটুকুতে পৌঁছে খুঁটিয়ে বিস্তারিত দেখতে পারে এই প্যাগোডার চুড়া তার চাইতেও বেশি উচ্চতায় অবস্থিত। এখানে ৫৪৪৮ টি হীরা, ২৩১৭ টি রুবি, অসংখ্য নীলকান্ত মনি ও অন্যান্য রত্ন, ১০৬৫ টি স্বর্ণের ঘণ্টা এবং একেবারে শীর্ষে ৭৬ ক্যারেটের একটি একক হীরা সংযুক্ত করা আছে। ব্রিটিশ আমলে জনশ্রুতি ছিলো ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের রিজার্ভের চেয়ে বেশি সোনা আছে শোয়েডাগন প্যাগোডায়।

ইতিহাসের সবচেয়ে বড় আকৃতির বানানো ঘণ্টাটি এখানে ছিলো। ১৪৮০ সালে রাজা ধম্মজেদি’র মন্ত্রীরা প্রজাদের কাছ থেকে কর হিসেবে আদায় করে ৩০০ টন তামা, কিন্তু রাজা এদের বাড়াবাড়িতে অখুশি হয়ে তাঁর রাগ প্রশমন করার জন্য এই তামাগুলো দিয়ে একটি ঘণ্টা তৈরি করে শোয়েডাগন প্যাগোডায় লাগিয়ে দেন। কিন্তু জ্যোতিষশাস্ত্র অনুযায়ী ঘণ্টা নির্মানের শুরুর দিনটা শুভ ছিলো না বলে এটির ধ্বনি ছিল বেসুরো। সেই ঘণ্টাটি পর্তুগীজ শাসনামলে হাতছাড়া হয়ে যায়। শোয়েডাগন প্যাগোডা দর্শনের জন্য বার্মিজদের কোন ফি দিতে হয় না, অন্য যে কোন দেশের পর্যটকদের দশ হাজার কিয়েট ফিস দিয়ে এন্ট্রি পাস নেয়ার নিয়ম রয়েছে। প্যাগোডার চত্বর পর্যন্ত ওঠার জন্য সিঁড়ির পাশাপাশি এস্কেলেটর ও লিফটের ব্যবস্থা আছে।

মূল স্তূপ ঘিরে দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীরা ঘড়ির কাঁটা ঘোরার নিয়মে, অর্থাৎ বাঁ থেকে ডানে পায়ে হেঁটে প্রদক্ষিণ করে। আমরা বাঁয়ে রওনা হওয়ার পর একে একে প্রদক্ষিণ করি কাশ্যপ, ককোসান্ধ, কোনাগমন ও গৌতম বুদ্ধের প্রতিবিম্ব।

(উইকিপিডিয়া উন্মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে তথ্য)

Myanmar এ প্যাগোডা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ভ্রমনের আকর্ষণ ।। ১ম পর্ব

Darun Travels: +8801713384190 +8801824416666

Affiliate Disclosure We are affiliated with several companies. When you purchase any referred product, we get a small commission. It does not charge you anything extra, but we get a small percentage.
Special Childs Care-adds

1 Comment

Comments are closed.