খাগড়াছড়ি জেলার ১০ টি দর্শনীয় স্থান | আলুটিলা গুহা | নিউজিল্যান্ড পাড়া | Khagrachari Travel Guide
কিছু সম্পর্ক রক্তের হয়না, হয় আত্মার আত্মীয়। সম্পর্কগুলোর গভীরতা নিখুঁত ভালবাসার মায়ায় আটকে যায়। খাগড়াছড়ি নিয়ে লিখতে এই সকল মুখগুলো ভেসে উঠছিলো বারবার। এই লেখায় খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো নিয়ে জানবো, পাশাপাশি এই মানুষগুলোর অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা জানবো।
মামা উঠেন উঠেন, এখানে ঘুমাতে আসছেন!!! (দরজায় জোরে জোরে নক করতে করতে বলে গেলো)। এই তুমি কি এখানে ঘুমাতে আসছো? আমরা চলে যাচ্ছি। এবার চোখ মেলে দেখি খুব অন্ধকার রুমে বাকিরা ঘুম। আমার চশমিশ লম্বু বন্ধু ডেকেছিলো। এবার আরো রাগান্বিত ভাবে, এই মামা তুই কি এডে ঘুমাইত আইসছোস (এটা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষা)? এটা আমাদের রুপন সাকির মামা। যার পরিচালনায় এই ট্যুর। দরজা খুলে বললাম মামা ফ্রেশ হয়ে আসছি। ওরা যাবেনা? না মামা এখনো অনেক অন্ধকার আর খুব ঠাণ্ডা।
ঘুম থেকে উঠেই প্রতিদিনের অভ্যাস পানি পান করার, পানি মুখে দিতেই মনে হলে দাঁতগুলো টনটন করছে! কুলি করার আগেই মনে হচ্ছে বরফ জমে গেছে, কোনো রকম কুলি করলাম আর চোখ দুটো একটু মুছে নিলাম। যথারীতি বসে পরলাম, সকালের জরুরি মিটিং-এ, কিন্তু এই বরফ পানি দিয়ে পরিষ্কার করা কতটা মধুর ছিলো! বুঝানো মুশকিল।
আমরা সব ছেলেরা বের হলাম, আমার ব্যাংকার বন্ধু তার বউ আর ১১ বছরের মেয়েটাসহ নিয়ে বের হলো। মা-মেয়ে দুজনই হোটেলের কম্বল জড়িয়ে প্রস্তুত। রুম থেকে বের হয়ে বারান্দা থেকে পাহাড়ের যত দূর চোখ যায় তা দেখে রীতিমতো অবাক। সত্যি অসাধারন এক দৃশ্য। শুধু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে উপভোগ করছিলাম। মেঘের ভেলা বারান্দা হয়ে আমাদের স্পর্শ করছিলো আর চোখের সামনে যেনো সাদা মেঘের লেক পাহাড়ের মাঝে ভেসে চলেছে। এরপর কংলাক পাহাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। পাহাড়ি রাস্তা, যত উঠছি ততই খাড়া আঁকা বাঁকা পথ। কংলাক পাহাড় বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত সাজেক ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি সাজেক ভ্যালির সর্বোচ্চ চূড়া। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা প্রায় ১৮০০ ফুট। উপর থেকে যখন দেখছি মনে হচ্ছে বিশাল লেক, দুই পাহারের মাঝে মেঘের সাদা ভেলা যেনো আমাদের সাথে ভেসে চলছে। কংলাক পাহাড়ের নিচের এই জায়গা থেকে উঠা বেশ কঠিন। একদম খাঁড়া। এর মধ্যে একজন স্ট্রোক থেকে সুস্থ হয়ে ফেরা ডাক্তার বন্ধু ও আরেকজনের হাঁটুতে সমস্যা। কিন্তু সবাইকে অবাক করে বন্ধুর পিচ্ছি মেয়েটা মাসাল্লাহ হেঁটে চলেছে। গ্রুপের অনেকে বাঁশের সহযোগিতা নিলো। উপরে উঠতেই একটু একটু আলো হওয়া শুরু হলো। একটু পর সেই কাঙ্খিত সূর্যোদয়ের অসাধারন মুহূর্ত উপভোগ করলাম ভাগ্যবান আমরা। বেশ আনন্দে সবাই মিলে উপভোগ করলাম আর অনেক ছবি স্মৃতিতে জমা হলো। কংলাক পাহাড়ের উপরে কংলাক পাড়া অবস্থিত। সাজেক ভ্যালি মূলত রুইলুই পাড়া এবং কংলাক পাড়ার সমন্বয়ে গঠিত। কংলাক পাহাড় থেকে লুসাই পাহাড় স্পষ্ট দেখা যায়। চারদিকে পাহাড়, সবুজ আর মেঘের অকৃত্রিম মিতালী চোখে পড়ে। সাজেক ভ্রমণরত পর্যটকদের কাছে এটি এখন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। রুইলুই পাড়া হতে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরত্বে এটি অবস্থিত; সাজেকের হ্যালিপ্যাড হতে ৩০-৪০ মিনিট ট্রেকিং করে কংলাক পাড়ায় যেতে হয়। কংলাক পাড়াটি কমলাক পাড়া নামেও পরিচিত। স্থানীয় তথ্য মতে, এই পাড়াটির পাশে বড় বড় কমলা বাগান অবস্থিত বলে এটিকে কমলাক পাড়া বলা হয়। পাহাড়ের নিচে কংলাক ঝর্ণা অবস্থিত এবং এই ঝর্নার নামানুসারেই এই পাহাড়ের নামকরণ করা হয়েছে।
পাহাড়চূড়ার ছোট্ট গ্রামটিতে ত্রিপুরা ও লুসাই নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস৷ জুম চাষ এ পাড়ার প্রধান খাদ্য ও উপার্জনের উৎস। বেশি চাষ হয় হলুদ, আদা ও কমলার। কংলাকে পানি সংকট রয়েছে। প্রতিটি বাড়িতেই চোখে পড়বে একাধিক ও বড়বড় পানির রিজার্ভার। বৃষ্টির জমানো পানিই এ পাড়ার পানির মূল উৎস। অধিবাসীরা ঘরের চালা থেকে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে রিজার্ভারে ধরে রাখেন ও দৈনন্দিন কার্যাদি সম্পন্ন করেন।
সাজেকে সর্বত্র মেঘ, পাহাড় আর সবুজ। এখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখা যায়। কংলাকে যাওয়ার পথে মিজোরাম সীমান্তের বড় বড় পাহাড়, আদিবাসীদের জীবনযাপন, চারদিকে মেঘের আনাগোনা দেখা যায়। এখানে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে উপজাতিয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এবং তাদের সংস্কৃতির নানা উপকরণ উপভোগ করা যায়।
সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলার সর্বউত্তরের মিজোরাম সীমান্তে অবস্থিত। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। আর দীঘিনালা থেকে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার। সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি থেকে এখানে যাতায়াত সুবিধাজনক। সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে রাঙামাটির লংগদু, পূর্বে ভারতের মিজোরাম, পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা অবস্থিত। সাজেক ইউনিয়ন হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন; যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। এখানে সাজেক বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে।
পথ কিছুটা ঢালু এবং বর্ষার সময় পিচ্ছিল থাকায় বয়স্ক ও শিশুদের উপরে উঠতে নিরুৎসাহী করা হয়। এলাকায় পানি কিছুটা অপ্রতুল বলে পর্যটকদের সাথে করে পানি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
এই ট্যুরে আমরা মোটামুটি বিশাল গ্রুপ আসছি। আমরা ৬ জন স্কুল বন্ধু ও আমাদের সবার পরিবার এবং আরেকটি পরিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার। আমাদের গ্রুপ লিডার রুপন সাকির ত্রিপুরা একটি ইন্টারন্যাশনাল বায়িং হউসে আছেন, সাথে হালিমভাই সহ আরও কয়েকজন। একরাত দুদিনে আমরা আমাদের সেরা সময়ই কাটালাম। সব বাচ্চারা একসাথে অনেক আনন্দ পেয়েছিলো। ও, সাজেকের এই ভ্রমণ আমাদের প্রথম আসা। রাতে পাহাড়ে সবাই মিলে গলা ছেড়ে গান করা হেঁটে চলা, এর আগে হেলিপেডে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত উপভোগ করা সবই খুব চমৎকার ছিলো। তখন হোটেল রেস্টুরেন্ট সবকিছুর মালিক ও পরিচালনায় ছিলো স্থাণীয় পাহাড়িরা। প্রথম যখন এসছিলাম বিদ্যুৎ ও পানির পর্যাপ্ত সুবিধা ছিলোনা। কিন্তু বর্তমানে সব সুযোগ সুবিধায় পরিপূর্ণ। এরপর একে একে আরও তিনবার আসছি, ব্যাচেলর ট্যুর শুধু বন্ধরা মিলে।
Read More…Munlai Para: Mysteries of the Mountains; Bandarban, Bangladesh.
এখানে আসার আগে একরাত খাগড়াছড়ি কাটালাম। ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ দুরের যেকোনো জায়গা থেকে আসলে অবশ্যই একরাত এখানে কাটাতে হবেই। না হলে এতো লম্বা পথ অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে খাগড়াছড়ি থেকে বুঝলাম, এমন একটা চমৎকার স্থানে অন্তত ২/৩ দিন প্রয়োজন। কারণ এতোগুলো ট্যুর স্পট ভাবাই যায়না। আমরা কয়েকবারে এসে পুরো খাগড়াছড়িকে আপন করে নিয়েছি। এখানকার স্থানীয়রা এখন আপনের চেয়েও আপন।
খাগড়াছড়ির কিছু দর্শনীয় স্পট ঘুরলাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা একটি স্থান। আমরা অনেকেই জানিনা খাগড়াছড়িতে সাজেক ভ্যালি ছাড়াও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে, যেখানে আমরা কম সময়ে এবং কম খরচে চাইলেই ঘুরে আসতে পারি।
সবচেয়ে ভালো বিষয় খাগড়াছড়ির মতো একটি পাহাড়ি জায়গায় এতো চমৎকার থাকার জন্য একটি আধুনিক হোটেল পাওয়া। তাদের আন্তরিকতায় আর সহযোগিতায় ভ্রমণ আরো মধুর হয়ে উঠলো। না হলে মাথাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল আমাদের। স্পটগুলোতে ঘুরাঘুরির জন্য গাড়ি ভাড়া করতে গিয়ে তো অবাক। এতো ভাড়া! থাকা খাওয়ার খরচও তো এতো বেশি না। রুপন মামার ফোনে এগিয়ে এলেন হোটেলের মালিক সয়ং নিজেই। তার সামনে যেতেই রুপনকে ধমকের সুরে বললেন। তুমি আমাদের এখানে অতিথি নিয়ে আসছো, কি করবা কোথায় যাবা আমাকে বলবে তো? হোটেলের গাড়ির ড্রাইভারকে ফোন দিলেন। তারপর অবাক করে দিয়ে বললেন, আপনাদের সাথে আমাকে নিবেন? আমরা সমসরে বলে উঠলাম এটা তো আমাদের সৌভাগ্য। যাত্রা পথে আলাপে আলাপে আমরা মামা হিসেবে সম্বোধন করলাম। রুপনকে মামা বলি সেই সুত্রে ডাকা। কারন গ্রুপের কয়েকজন এর আগেও এসছিলো এবং তারাও মামা ডাকে। প্রথমে খাগড়াছড়ির পর্যটন আকর্ষণ আলুটিলা গুহায় প্রবেশ। এরপর একে একে ৩টি স্পটে ঘুরলাম। মামা থাকায় আমরা প্রতিটি স্পটে বেশ ভালো সমাদর পেলাম। আসলে আমরা বুঝতে পারিনি এতো বড়ো একজন সম্মানীয় ব্যক্তির সাথে ঘুরছিলাম। এতো অমায়িক চমৎকার মনের মানুষ। কতটা ব্যস্ত একজন মানুষ, আমাদের পুরো দিনটিই উপহার দিলেন।
এরপর একসাথে হোটেলে, মামা আমাদের হোটেল ঘুরিয়ে দেখালেন। পুরো হোটেলটি সাজানো ঘুছানো। রিসিপশন, দুটো রেস্টুরেন্টের একটি গ্রাউন্ডফ্লোরে। লিফট! এই পাহাড়ি জায়গায় লিফট? জানলাম একমাত্র এই হোটেলেই আছে। প্রতিটি ফ্লোর পরিস্কার পরিছন্ন। কয়েকটি রুম অতিথিদের ড্রাইভারদের জন্যে রাখা।
খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেক অবশ্যই একদিন না একদিন তো আসবেনই, তখন আমার এই লেখাটি অনেক কাজ দিবে।
প্রতিটি রুমের ডিজাইন, ফার্নিচার, বাথরুমে বাথটাব সহ বেশ ভালোই করেছে। ৩টা বেড রুম, যেখানে ৬ জনের গ্রুপ থাকা যাবে, ভালোই। আমরা ভিআইপি স্যুইট রুমে ছিলাম। আমার খুব পছন্দের একটা রুম। অবশ্য প্রতিবার একইরকম রুমে থাকা হয়না, ফ্যামিলি হলে এইরকম আবার ফ্রেন্ড গ্রুপ হলে অন্য রুম। অনেক টাকা খরচ করেছেন এই হোটেলের আধুনিকায়নে। বাথটাব দেখে একটু অবাকই হলাম। প্রায় প্রতিটি বাথরুমেই আছে। ঢাকা বা কক্সবাজার এই রকম ভিআইপি স্যুইট রুম ১২ থেকে ১৫ হাজার তো হবেই। যা বুঝলাম, পার নাইট ১,৮০০ টাকা থেকে ৮,০০০ টাকার মধ্যে রুমগুলোর ভাড়া। তবে আমরা যে সুযোগ সুবিধা ও ডিসকাউনট পেয়েছি, তা কিভাবে আপনারা পাবেন তা জানাচ্ছি।
রুফটপে রয়েছে রেস্টুরেন্ট ও কনফারেন্স রুম যেখানে আয়োজন করা যাবে মিটিং/সেমিনার/জন্মদিন/রিসিপশন সহ যেকোনো ধরনের প্রোগ্রাম। আয়োজনের জন্যে বুক থাকে। ৬০/৭০ জন অতিথিদের জন্য পারফেক্ট।
এবার রাতের খাওয়া শেষে নাইট ট্যুর, বাইকের ব্যবস্থা হয়ে গেলো একটু দূরে পাহাড়ের চূড়ায় গানের আয়োজন। এখন শুধু গান হবে। সারারাত যেন জীবনের সব কষ্ট-দুখকে গানে গানে ভুলিয়ে সুখের ভেলায় ভাসতে লাগলাম সবাই।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণের প্রধান আকর্ষণের মধ্যে রয়েছেঃ (Khagrachari Travel Guide).
আলুটিলা গুহা (Alutila Cave) পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলায় আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক গুহার নাম। স্থানীয়দের কাছে আলুটিলা গুহা ‘মাতাই হাকড়’ বা ‘দেবতার গুহা’ নামে পরিচিত। খাগড়াছড়ি শহর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে মাটিরাঙ্গা উপজিলায় আলুটিলা গুহা অবস্থিত। আলুটিলা গুহার দৈর্ঘ্য ৩৫০ ফুট। আলুটিলা জায়গাটি আমার জন্য ছিলো নতুন। তাই মনে অন্য রকম এক আনন্দ কাজ করছিলো। গুহার কথা শুনে বাচ্চারা ভয়ে ছিলো যেহেতু ঐখানে আলো থাকবে না। আমরা ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। তবে মামা বলেছে গুহার ভেতরে চাইলে মশাল বা বিকল্প হিসাবে মোবাইল টর্চ বা চার্জ লাইট নিয়ে যেতে পারবো। তাছাড়া গুহার অভ্যন্তরের পাথর গুলো পিচ্ছিল, ভালো গ্রিপের জুতা পড়ে গেলে ভালো হয়। গুহার এক প্রান্ত দিয়ে ঢুকে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের হতে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। ব্যপারটা এডভেঞ্চারাস লাগার জন্য গুহার ভেতরে আমরা টর্চ ব্যবহার না করে মশাল ব্যাবহার করেছিলাম। সবাই ব্যাপারটা খুবই উপভোগ করেছিলো। বিশেষ করে বাচ্চারা। একটা সময় আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের মূল আর্কষণ ছিল সুড়ঙ্গপথ। তবে বর্তমানে ঝুলন্ত সেতু, গোলচত্বর, নয়নাভিরাম হাঁটাপথ আর পাহাড়ে ধাপ কেটে তৈরি করা সিঁড়ি যোগ হয়েছে। উঁচু পাহাড়ের বেদিতে দাঁড়িয়ে দেখতে পারবেন খাগড়াছড়ি শহরের বিস্তার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ ফুট ওপরে অবস্থিত খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। আমরাও মামাকে নিয়ে ঐ সকল জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলাম।
রিছাং ঝর্ণা (সাপ মারা রিসাং ঝর্ণা নামেও পরিচিত) খাগড়াছড়ি জেলায় মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারা গ্রামে অবস্থিত একটি পাহাড়ি ঝর্ণা। খাগড়াছড়ি শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১০ কি. মি.। এই ঝর্ণার উচ্চতা প্রায় ১০০ ফুট।মামা জানালো আলুটিলা গুহার কাছেই রয়েছে এই রিসাং ঝর্ণা। আলুটিলায় ঘুরতে এসে এত কাছের ঝর্ণাটি না দেখে চলে যাবো আমরা,তা তো হয় না। সবাই মিলে আলুটিলা গুহা দেখে ঐখান থেকে এক সাথে রিছাং ঝর্ণা দেখতে গিয়েছিলাম। মামা সাথে থাকাই আমাদের রিসাং ঝর্ণায় যেতে কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়নি। খাগড়াছড়িতে প্রথম ভ্রমণ হিসেবে বেশ ভালোই কেটেছে দিনটি।
দ্বিতীয় দিনে মামাকে জানালাম আমাদের তো ঝর্ণা দেখা হলো, গুহাও ঘুরে আসা হলো। এখন নদী জাতীয় কোনো জায়গায় ঘুরতে পারলে ভালো হতো। মামা সাথে সাথে আমাদের মায়াবিনী লেকের কথা বললেন। তিনি জানালেন খাগড়াছড়ি সদর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে ভাইবোন ছড়া বাজার থেকে ১০ মিনিট হেটে গেলে মায়াবিনী তৈসা লেক অবস্থিত। লেকটি মূলত তৈরী করেছে একতা মৎস্য সমবায় সমিতি। ২৮ সদস্যের একতা মৎস্য সমবায় সমিতির উদোগে তৈরি হয়েছে এই বিনোদন কেন্দ্র। মামার কথা শুনে যাওয়ার জন্য উতসাহিত হলাম তাই আর দেরি না করে মামার কথা ধরে মায়াবিনী লেকের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। মায়াবিনী লেক, নাম যেমন মায়াবিনী তেমনি কাজও মায়ার। আমার ধারণা এই লেক ভ্রমণে এলে যে কেউ মায়ার জালে আটকে যাবে। লেকের মাঝে ছোট ছোট দ্বীপ, নৌকা ভ্রমণ, এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে যাওয়ার জন্য বাশের সাঁকো। লেকের স্বচ্ছ পানির উপরে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হওয়ার জন্য, ঠান্ডা হিমেল হাওয়া। এসব নৈসর্গিক সৌন্দর্য যেকোনো ভ্রমণপ্রেমী মানুষকে মুহূর্তে মায়ার জালে আটকে ফেলবে। এই লেকের আশে পাশে সবুজ সমারোহ আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। মায়াবিনী লেক থেকে আমরা হর্টিকালচার পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক হলো খাগড়াছড়ির বিখ্যাত আরেকটি জায়গা। খাগড়াছড়ি জেলা শহরের খুব কাছাকাছি ২২ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা ‘জেলা পরিষদ পার্ক’ বা হর্টিকালচার পার্ক। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের মালিকানাধীন এ পার্কের বিশেষ আকর্ষণ রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর আদলে তৈরি ‘ঝুলন্ত সেতু’, রয়েছে খুবই সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর পাহাড় ও প্রকৃতির অরণ্যে ঘেরা, কৃত্রিম হ্রদ ও নৌকায় ভ্রমণের সুযোগ, নামাজের জায়গা, গেস্ট হাউজ, সভা কক্ষ, ভ্রাম্যমান খাবারের দোকান, ও নানাবিধ ফুল ও ফল গাছ। মামার কাছে এই পার্কের এইসব বর্ণনা শুনেই মূলত আমাদের যাওয়ার ইচ্ছা হয়। আমরা পার্কে ভেতরে ঢুকেই দেখি এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ যা দেখে আমরা সকলেই মুগ্ধ হই। পার্কের মধ্যে লেক, পাহাড়, ঝুলন্ত সেতু, সবুজবেষ্টনী ও কৃত্রিম হ্রদ দেখে যে কেও মুগ্ধ হতে বাধ্য। এখানে চলে পাহাড়, নদী আর হ্রদের এক অপূর্ব মিলনমেলা। আমরা পার্কের সব কিছুই বেশ উপভোগ করি। সত্যিই মনে রাখার মতো এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ ছিলো এই পার্কের।
শান্তিপুর অরণ্য কুঠির বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার অন্তর্গত পানছড়ি উপজেলার একটি বৌদ্ধবিহার ও পর্যটন স্থান। বিশাল এলাকাজুড়ে অরণ্যে আবৃত বলেই এর নামকরণ হয়েছে অরণ্য কুটির। নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে ধ্যান সাধনার জন্য ভিক্ষুরা এই কুটিরটি ব্যবহার করেন। এটি মূলত বৌদ্ধ মন্দির। এই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ হল এখানেই বাংলাদেশের তথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় বুদ্ধ মূর্তিটি রয়েছে। শান্তিপুর অরণ্য কুটিরে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলোর মধ্যে সাড়ে ৪৮ফুট উচ্চতার গৌতম বুদ্ধের মূর্তি। বেশ কয়েকজন বন্ধুরা মিলে এই ট্যুরটি দিয়েছিলাম। এবারও সেই আগের হোটেলেই উঠলাম। আগেরবার তাদের এতো ভালো আচরণের কারণেই আবারও বন্ধুদের নিয়ে এখানেই আসা হল। রুপন মামা ট্যুর গাইড হিসেবে আমাদের সাথে তো আছেই। এই শান্তিপুর অরণ্য কুঠির দেখে মনে হলো প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য্য তার অকৃপন দানে সবকিছু উজাড় করে যেন মেলে দিয়েছে এখানে। বিধাতা যেন স্বয়ং চিত্রকর সেজে মন-প্রাণ ঢেলে, শৈল্পিক রুপ-রঙ দিয়ে আর মন মাতানো সৌন্দর্য্যের রঙ তুলিতে সাজিয়ে দিয়েছে এই পূন্যময় তীর্থস্থানটি।
দেবতার পুকুর খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙ্গামাটি সড়কে জেলা সদর থেকে ১১কিঃ মিঃ দক্ষিণে মূল রাস্তা হতে ৪কিঃ মিঃ পশ্চিমে সদর উপজেলার নূনছড়ি মৌজায় চির প্রশান্তিময় দেবতার পুকুর এর অবস্থান। সমুদ্র সমতল হতে ৭০০ ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের চূড়ায় এই দেবতার পুকুর অবস্থিত। এটি মাতাই পুখিরি নামেও পরিচিত। মাতাই অর্থ দেবতা এবং পুখিরি অর্থ পুকুর। মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালা মুখ থেকে এ হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এসব ধারণার কারণে এই পুকুরকে রহস্যময় বলা হয়। আমরা যখন গিয়েছিলাম সময়টা ছিল গ্রীষ্মকালের দুপুরবেলা। তপ্ত রোদে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে এই পুকুরে পাশে যেতেই কোনো এক অজানা প্রশান্তি অনুভব করলাম। প্রখর রোদেও পুকুরের পানি ছিলো শীতল, মনে হলো আসলেই রহস্যময় কিছু আছে এই পুকুরে। তবে যাই হোক এই ভ্রমণটি খুবই ভালো লেগেছিলো।
তৈদুছড়া ঝর্ণা খাগড়াছড়ি থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে দীঘিনালা উপজেলার বুনো জঙ্গলের মাঝে আঁকাবাঁকা পাহাড়ের ভাঁজ দিয়ে বয়ে চলছে নয়নাভিরাম তৈদুছড়া ঝর্ণা। ত্রিপুরা ভাষায় তৈদু মানে পানির দরজা এবং ছড়া মানে ঝর্ণা। ১০০ ফুট উচু ঝর্ণা মুখ থেকে বয়ে যাওয়া শীতল ও স্বচ্ছ পানির কলকল শব্দে মুখরিত হয়ে থাকে তৈদুপাড়া এলাকার চারপাশ। আমরা যেদিন গিয়েছিলাম ঐদিন ওয়ার্কিং ডে হওয়ায় ভীড় খুবই কম ছিল। অন্যথায় ট্র্যাকিং প্রেমীরা দীঘিনালার দুর্গম গিরি পথ পাড়ি দিয়ে খাগড়াছড়ির বৃহত্তম এই ঝর্ণা দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে। প্রাকৃতিক অসাধারন বিচিত্রের এই ঝর্ণা এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে খাগড়াছড়ির পর্যটনশিল্পে। তৈদুছড়া যাওয়ার পথে ছোট বড় বেশকিছু ঝর্ণা ও পাহাডড়ের স্বর্গীয় রূপ মুগ্ধ করবে যে কাউকে। আমরাও মুগ্ধ হয়েছি।
নিউজিল্যান্ড পাড়া দেশের মধ্যেই আছে নিউজিল্যান্ড পাড়া। নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন! নামটা অপরিচিত বটে। অবাক করা বিষয় হলেও সত্যিই যে, খাগড়াছড়ির এই স্থানটির নাম নিউজিল্যান্ড পাড়া।
খাগড়াছড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে পানখাইয়া পাড়ার পাশেই অবস্থিত ‘নিউজিল্যান্ড পাড়া’। পানখাইয়া পাড়া থেকে বেড়িয়ে আপার পেরাছড়া গ্রামের দিকে যাওয়ার রাস্তাটাকে বলে নিউজিল্যান্ড সড়ক। সড়কের দুইপাশে সবুজ ক্ষেত খামার, এটিই খাগড়াছড়ির একমাত্র সমতল ভূমি। সবুজ শস্যক্ষেত আর তার পেছনের পাহাড়ের মিতালি এক অসাধারণ নান্দনিক সৌন্দর্য এখানে ছড়িয়ে আছে। শহরের ভেতরে পাহাড় আর ধানখেতের মিতালি। এলাকার ল্যান্ডস্কেপটা দেখতে নিউজিল্যান্ডের মতো। তাই স্থানীয় মানুষ এর নাম দিয়েছে নিউজিল্যান্ড পাড়া। নিউজিল্যান্ড পাড়ায় গেলে শুধু পাহাড় আর সবুজ প্রকৃতিই নয়, আরও দেখবেন ঝরনা, শুভ্র মেঘ, গোধূলির অস্তমিত লাল সূর্যের আভা। সবুজ পাহাড়, দূরে ঝর্ণা ও নদীর কুলকুল ধ্বনিতে বয়ে চলা, নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা এবং ফসলের মাঠের মেলবন্ধনে গঠিত নিউজিল্যান্ড পাড়াটি যেন এক টুকরো নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে এসেছে খাগড়াছড়ির মাটিতে। এ ছাড়াও পাহাড়ি জনপদের জীবনযাপনের পদ্ধতিও কাছ থেকেই দেখতে পারবেন।
হাতিমাথা বা হাতিমুড়া প্রায় ৩শ ফুট দীর্ঘ এই শোভা খাগড়াছড়ির সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। পাহাড়িভাবে একে মায়ুং কপাল বা হাতিমুড়া নামেও ডাকা হয়। স্থানীদের কাছে হাতিমাথা খ্যাত এই স্থানের চাকমা নাম ‘এদো সিরে মোন’। আবার অনেকের কাছে এটি স্বর্গের সিড়ি হিসাবেও পরিচিত।
দেয়ালঘেরা ঠান্ডা ছড়া (Thanda Chora) খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার ধর্মঘর এলাকায় অবস্থিত একটি ঝর্ণা। দুই পাশে কালো পাথরের দেয়ালের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝর্ণা, তাই এর নামকরন করা হয়েছে ঠান্ডা ছড়া। দুপাশে পাথরের দেয়ালের কারনে আপনি ঝর্ণার যত ভেতরের দিকে যাবেন ঠান্ডা ততো অনুভব করতে পারবেন। এছাড়া চারপাশের সবুজে মোড়ানো পাহাড়ি প্রকৃতি, মেঘের লুকোচুরি খেলা এবং আদিবাসী জীবনধারার বৈচিত্রময় অভিজ্ঞতা আমাকে বেশি আকৃষ্ট করেছে।
তৈলাফাং ঝর্ণা বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় অবস্থিত। এটি খাগড়াছড়ি জেলার নতুন ঝর্ণাগুলোর মাঝে একটি। বর্ষাকালে ঝর্ণার পানি প্রবাহ বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া আরো রয়েছে চমৎকার কিছু দর্শনীয় পার্বত্য স্থান, যা আপনাদের সময়ের উপর নির্ভর করছে প্রতিটি স্থানের সৌন্দর্য উপভোগ করা। এতো অল্প সময়ে এতোগুলো স্পট ঘুরে দেখা বেশ ক্লান্তিকর। যখন শুনলাম আরো বেশ কয়েকটি স্পট বাকি রয়ে গেছে! তবে মুল শহর থেকে দূরে।
বন্ধুমামা রুপন সাকির আর এই মামা বুঝিয়ে দিলেন পাহাড়ে থাকা মানুষগুলোর মন কত বড়ো আর আন্তরিকতায় পরিপূর্ণ। আমরা এখন ওদের পরিবারের অংশ, পরিবারের সবার সাথে এক আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ। পারিবারিক সহ যেকোনো অনুষ্ঠানে আমাদের উপস্থিতি তাদের কাম্য আর আমরা অপেক্ষায় থাকি কখন আবার যাবো।
তৃতীয় বারের মত আয়কর বিভাগ চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি হতে সেরা করদাতা সম্মাননা পওয়া একজন আন্তরিক সাদাসিধে সুন্দর মনের মানুষ S Ananta Bikash Tripura মামা। যিনি একাধারে সরকারের প্রথম শ্রেণীর তালিকা ভুক্ত একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং হোটেল গাইরিং এর স্বত্বাধিকারি। এখন খাগড়াছড়ির সাথে রক্তের সম্পর্কের চেয়েও বেশি আত্মার সম্পর্ক। রুপনের পরিবারের একজনের মতোই। তার পরিবারের সবার সাথেই চমৎকার সম্পর্ক, বিশেষ করে ছোট ভাই আকাশ খুবই আন্তরিক। এরপর পরিবারের সকল সদস্যরা তো আছেই। প্রতিবার গেলেই চিং, সিপু, প্রান্ত সহ সবাই আমাদের অনেক সময় দেয়, বাইক করে নানা প্রান্তে ঘুরাঘুরি।
অরেকজনের কথা বলতে হয়, চয়ন মামা। চমৎকার একটা মানুষ, বাসায় নিয়ে খাওয়াবে। উনার সব আইটেম হয় পাহাড়ি ধাচে স্পেশাল। সবসময় হাশিখুশি এবং চমৎকার সুরে গান করেন। আড্ডার আসর মাতিয়ে রাখেন।
তাই এরপর যতবারই আসি এই হোটেল গাইরিং-এই উঠি, প্রতিবারই ২/৩ দিন সময় নিয়ে চলে আসি। খাগড়াছড়ি এখন আমার সেকেন্ড হোম। এই হোটেলে অনেক সুযোগ সুবিধা, একদম কক্সবাজার এর মতো একটি আধুনিক হোটেল। ফ্রী ওয়াই ফাই, হোটেলের লন্ড্রি সার্ভিস, গিজার (প্রতি রুমে গরম ও ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা রয়েছে), ২৪ ঘন্টা রুম সার্ভিস, ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ (বিদুৎ চলে গেলে জেনারেটর এর সুবিধা), অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, রেন্ট এ কার সহ এতোগুলো সুবিধা আর কই পাবো! তার উপর ২৪ ঘন্টা CCTV দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
এরমধ্যে আপনাদের জন্যে আমাদের মতো মামা সম্পর্কীয় সুযোগ সুবিধা আদায় করে নিলাম।
আমাদের কোড #TechyOctopus ব্যাবহারে থাকছে বছরজুড়ে বিশেষ #Discount & #Complimentary_Breakfast.
এখানে খাবার খাবেন মন খুলে দারুন তৃপ্তি নিয়ে। বিশেষ করে আমার মতো যারা মুরগির বা হাসের হাড্ডি চিবুতে পছন্দ করেন, তাদের জন্যে দারুন। কারণ আমরা শহরে মন চাইলেও হাড্ডি চিবুতে পারিনা। কিন্তু এখানে একদম ফ্রেশ পাহাড়ি, কোনো কেমিক্যাল বা ক্ষতিকর কিছুর ভয় নেই। ভিন্ন স্বাদের নানা মেনুগুলোও ছিলো চমৎকার সুস্বাদু। সব ফ্রেশ পাহাড়ি জুমচাষের খাবারের সমাহার। আর লেকের মাছ।
পাহাড়, ঝরনা, আঁকাবাঁকা পথ, সবুজের সমারোহ, লেক সহ প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ভ্রমণপিয়াসীদের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে টেনে আনে।
যেহেতু এটা পাহাড়ি এলাকা তাই পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতেও চলে আসেন অনেকেই। পাহাড়ি খাবারের মধ্যে জুম সবজি, বাঁশ কোড়ল, ব্যাম্বু চিকেন, ব্যাম্বু ফিশ, জুম ডাল, পাজন ইত্যাদির স্বাদ নিতে পারেন। এছাড়া আরো রয়েছে: তেঁতুলের কচি পাতা দিয়ে মুরগির স্যুপ, ফাল্গুনের কচি লালাভ আমপাতা ভর্তা কিংবা কাঁচা কচি আস্ত কলাগাছের ভর্তা, পাহাড়ি মুরগি-হাস এবং নানা রকম মৌসুমি ফলের স্বাদ তো রয়েছে। মজাদার এবং অরগানিক খাবার পেতে জুড়ি নেই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির সমতল শহরের Hotel Gairing এর ঘরোয়া রেস্টুরেন্টে। যেহেতু আমাদের কোড ব্যবহারে বিশেষ সুবিধার পাশাপাশি সকালের Complimentary Breakfast পাচ্ছেন, তাই দুপুরের ও রাতের খাবার এই হোটেলের Ground Floor or Rooftop restuarant_এ বুক করে রাখতে পারেন।
এছাড়াও ভিন্ন স্বাদ পেতে যেতে পারেন “Heritage Dine” restuarant_এ।
বুকিং দিতে গাইরিং-এর ফেসবুক পেইজ ফলো দিয়ে বিস্তারিত দেখে নিন। এরপর ফোনে বা মেসেঞ্জারে বুক করতে #TechyOctopus কোডটি বলুন।
ভালো থাকুন সবাই। আশাকরছি খাগড়াছড়ি ও সাজেক ভ্রমনে এই আর্টিকেল “খাগড়াছড়ি জেলার ১০ টি দর্শনীয় স্থান | আলুটিলা গুহা | নিউজিল্যান্ড পাড়া | Khagrachari Travel Guide” আপনাদের উপকারে আসবে।
Golden Truth Team