স্বপ্ন যখন “Europe” এর পথে……..২য় পর্ব

Special Childs Care-adds
স্বপ্ন যখন “Europe” এর পথে........২য় পর্ব

বাংলাদেশীদেরকে বিদেশীরা কিভাবে মূল্যায়ন করে

এই লেখা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, যারা স্বপ্ন দেখেন সঠিক পথে Europe, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, পোল্যান্ডসহ বিদেশে চাকরিসহ ভিসা নিয়ে যাবার এবং যারা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়তে যাবেন পার্ট টাইম চাকরিও করবেন এই আশায়।

পূর্বের পর্বগুলো ধারাবাহিক ভাবে পড়ে নিলে বুঝতে সুবিধা হবে। ধারাবাহিক ভাবে লিখেছেন; সম্মানিত ব্যারিষ্টার মহোদয়গণ, ইমিগ্রেশন আইনজীবীগণ এবং প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে ব্যারিস্টার জুবায়ের আহমেদ স্যার।

৬. ওয়ারশ, পোল্যান্ড:- পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ কিংবা আশেপাশের বড় শহরগুলো যেমন পজনান ক্র্যাকো, বাইদোস্তকোর শহরগুলোতে বাঙালিদেরকে মূলত কাবাব ওয়ালা হিসেবেই চেনে। কেননা এই শহরগুলোর বেশিরভাগ কাবাব শপ এর মালিক বাঙালি, পাকিস্তানি না হলে ইন্ডিয়ান। বিভিন্ন কোম্পানির মালিকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আজ থেকে ঠিক ১১ বছর আগে প্রথম যখন বাংলাদেশে পোল্যান্ডের কথা বলেছিলাম আমরা, তখন মানুষ আমাদেরকে নিয়ে হাসাহাসি করেছিল অনেকেই বলেছিল ওরাই খাইতে পায় না আমরা গিয়ে কি করব? বর্তমানে সবাই পোল্যান্ডে যেতে চায় এবং গেলে মোটামুটি থাকে। সুতরাং শ্রমবাজার নিয়ে খুব বেশি একটা অসুবিধা নেই প্রচুর চাহিদা আছে কাজও আছে। পোল্যান্ডের নতুন আইন অনুযায়ী বাংলাদেশি টাকায় কমপক্ষে ৮৬ হাজার টাকা মাসিক বেতন হাতে দিতে হয়। এছাড়া বেশিরভাগ মালিক থাকা খাওয়া ফ্রি দেয় টেক্সটাও দিয়ে দেয়। সুতরাং কোনদিক থেকেই কোন সমস্যা নেই। মূল সমস্যা হচ্ছে ভিসা রেশিও। কখনো ৯৫ পার্সেন্টে উঠে যায় আবার কখনো ৪৫ পার্সেন্ট নেমে যায় অর্থাৎ অনেকটা এম্বাসির মর্জির উপর নির্ভর করে। তবে ইন্ডিয়া বাদে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, দুবাই থেকে বেশ ভালো ভিসা হয়।

Europe
Image credit Google: স্বপ্ন যখন “ইউরোপ”

৭. প্রাগ, চেক রিপাবলিক:- চেক রিপাবলিকের মানুষজনের কাছে বাঙালিরা ভদ্র এবং কাজের লোক হিসেবে বিবেচিত। প্রচুর স্টুডেন্ট গিয়ে কাজ করার কারণে এই সুনাম অর্জন হয়েছে। মোটামুটি এক থেকে দেড় লাখ টাকা ইনকাম করা যাচ্ছে। চেক রিপাবলিক নিয়ে খুব বেশি কিছু বলার নেই। সবাই আপনারা জানেন । এটার মূল সমস্যা অ্যাপয়েন্টমেন্ট। এপয়েন্টমেন্ট পেলে ভিসা পাওয়া যায় এবং ভিসা পাওয়ার পর বেশিরভাগ লোকজনই ওখানে অবস্থান করে যে কারণে আমাদের বাজারটা মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছে।

৮. ভ্যালেন্সিয়া, স্পেন:- স্পেনের বার্সেলোনা/ মাদ্রিদ এ সমস্ত শহরগুলোতে মূলত বাঙালিদের বসবাস। এই শহরগুলোর মালিকরা বাঙালিদের পছন্দ করেন না এবং বাঙ্গালীদের নামে কোন ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করতে আগ্রহী না। অনেক কারণ আছে সেগুলো বিস্তারিতভাবে আর নাইবা বললাম। সে কারণে ওইখানে আমাদের যে বাঙালি ভাইয়েরা আছেন তারা মনে করেন স্পেন থেকে বাংলাদেশের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু হয় না। তাদেরকে দোষ দেয়া যাবে না কেননা তারা যা দেখবেন সেটাই বলবে। এর সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র আপনি পাবেন ভ্যালেন্সিয়া শহরে গেলে। এটি একটি আধুনিক শহর তারা গড়ে তুলেছে। যেখানে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে এবং বেশিরভাগ ল্যাটিন আমেরিকার লোকজন এসে সে কাজগুলো করছে কিছু কিছু ইন্ডিয়ান এবং পাকিস্তানি সাম্প্রতিক সময় যাওয়া শুরু করেছে। আমাদের সাহায্য নিয়ে হাতে গোনা কয়েকজন গিয়ে যোগদান করেছে। এই শহরে এখনো পর্যন্ত বাঙালিদের অবস্থান বেশ ভালো। যারা যাবেন তারা যদি এই সুনাম ধরে রাখেন তাহলে ভবিষ্যতে আরও অনেকের যাওয়ার রাস্তা সুগম হবে। এখানে মোটামুটি ১২০০ থেকে ১৫০০ ইউরো আপনার পকেটে ঢুকবে। পারমিট ইস্যু হতে বেশ সময় লাগলেও এম্বাসির এপয়েন্টমেন্টের জটিলতা না থাকায় সব মিলিয়ে একটি ভালো অপশন।

স্বপ্ন যখন “Europe”
Image credit Google: স্বপ্ন যখন “Europe”
স্বপ্ন যখন “Europe”
Image credit Google: স্বপ্ন যখন “ইউরোপ”

৯. বার্লিন, জার্মানি:- জার্মানদের কাছে বাংলাদেশের লোকজন হচ্ছে নিপীড়িত জনগোষ্ঠী। কারণ যারা ছাত্র হিসেবে জার্মানিতে গিয়েছেন শুধু তারা ছাড়া বাকি সবাই কমবেশি এসাইলাম মেরেছেন এবং ব্যাপক আকারে গ্রহণ করা হয়েছে। তারা ধরে নিয়েছে বাংলাদেশের অবস্থা খুব খারাপ এবং রাজনৈতিক কারণে জান মালের খুবই সংকট রয়েছে। সে কারণেই মালিকদের কাছে একটু সহানুভূতি পাওয়া যায়, তাছাড়া উন্নত পরিবেশ, জীবনমান এবং বেতন ভালো হওয়ায় যারাই কাজে যোগদান করেন তারা সহজে কাজ ছাড়ে না। বাংলাদেশ থেকে জার্মানির সমস্যা হচ্ছে এম্বাসির এপয়েন্টমেন্ট দেড় দুই বছর সময় লেগে যাচ্ছে বাংলাদেশের কেউ এতদিন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে রাজি না। বাংলাদেশের বাহিরে থেকে বেশ কিছু কাজ আমরা করতে পেরেছি এবং ইউরোপের ননসেনজেন দেশ থেকে অর্থাৎ বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, রোমানিয়া থেকে বেশ কিছু লোকজন আমরা জার্মানিতে নিয়ে আসছি। তারা অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করছে বিধায় কাজের কোন অভাব নেই। মোটামুটি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ইনকাম করা যাচ্ছে। যারা ইউরোপের বিভিন্ন ছোট খাটো দেশের অবস্থান করছেন এটি তাদের জন্য একটি ভালো সুযোগ।

১০. প্যারিস, ফ্রান্স: জার্মানির মতো ফ্রান্সেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী অগণিত, এ কারণে একটি সহমর্মিতা রয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন যাবত ফ্রান্সে বাঙালিরা অবস্থান করে তাদের অবস্থান অনেক মজবুত করেছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে বাঙালিরা গিয়ে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয় কিংবা ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করেন। বর্তমানে যারা অবস্থান করছেন তারা বেশ ভালো আছেন কারো কোন অভিযোগ নেই। ১ থেকে দেড় লাখ টাকা খুব সহজে ইনকাম করতে পারছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যারা অবস্থান করছে তারা বৈধভাবে এখানে আসতে পারেন এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে এখানে আসতে পারেন। ফ্রান্স এম্বাসিতে এপয়েন্টমেন্ট একটু জটিল হলেও সময় নিয়ে চাইলে পাওয়া যায়। তবে মূল জটিলতা হচ্ছে ইন্টারভিউ বাংলাদেশের লোকজন এম্বাসিতে গেলে ঘাবড়ে যায় এবং ইন্টারভিউ ভালো হয় না সেই কারণে ভিসা পেতে কষ্ট হয়। মোটামুটি সময় প্রস্তুতি নিয়ে চেষ্টা করলে বাংলাদেশের একটি বড় বাজার হতে পারে। কেননা ফ্রান্সে নতুন করে সব জায়গায় কনস্ট্রাকশন শুরু হয়েছে অর্থাৎ তারা সবকিছু আবার নতুন করে বানাচ্ছে যে কারণে প্রচুর লোক দরকার। আর যে সমস্ত এলাকায় নতুন করে ডেভলপ হচ্ছে সেখানে রেস্টুরেন্ট সহ অন্যান্য জায়গায় লোকবল এর প্রয়োজন হচ্ছে।

স্বপ্ন যখন ইউরোপ (তৃতীয় পর্ব)

Affiliate Disclosure We are affiliated with several companies. When you purchase any referred product, we get a small commission. It does not charge you anything extra, but we get a small percentage.
Special Childs Care-adds